আজকের তুমি আমার বড্ডো বেশি প্রিয়
প্রিয় মা,
আজকের এই লেখাটা আর অন্য কাউকে নিয়ে লিখতে ইচ্ছে করলো না। আজ শুধু তোমাকে নিয়ে লিখতে মন করছে। ছোটো থেকে আমার বর্তমান সময় অবদি নানা ভাবে তুমি আমার পাশে থেকে আমাকে সাহস জুগিয়ে এসেছো। কোনো দিনও হেরে যেতে দাওনি। যখনই আমাকে ভাঙতে দেখেছো একটা ধাক্কা দিয়ে সামনে এগিয়ে দিয়ে এসেছো।
শুরু থেকে বলতে গেলে সেই প্রথম আমার জন্মের সময় কষ্ট তোমাকে কম পেতে হয় নি। নিজের শরীরের ক্ষতি হবে জেনেও আমাকে পৃথিবীর আলো দেখানোর জন্য সব ব্যথা সহ্য করেছিলে। শুধু তাই নয়। ডাক্তার যখন তোমাকে বলেছিল তোমার মেয়ে চব্বিশ ঘন্টাও কাটাতে পারবে কি না খুব সন্দেহ রয়েছে তখন তুমি হয়তো নিজের মনেই আমাকে বলেছিলে, " জলদি ওঠ না হলে হারামজাদি মেয়ে তোর কপালে দুঃখ আছে!" তোমার আমার প্রতি মনের জোর আর বিশ্বাসের জেরেই হয়তো সেই রাতটা কাটিয়ে তোমার কোলে এসেছিলাম। হ্যাঁ, এখনও আমি মা হয়ে উঠিনি, কিন্তু মেয়ে তো তাই উপলব্ধিটা বড্ডো বেশি করে করেই বলতে পারি সেদিন তোমার ওই হাসির কোনও তুলনা ছিল না। হয়তো নিজের চোখের জলটাও ধরে রাখতে পারো নি সেদিন।
ছোট থেকে খুব একটা বেশি জ্বালাই নি তোমাকে। সব সময় তুমি যা বলে এসেছো সেটাই মেনে এসেছিলাম। সে আমার চকোলেট বেশি খাওয়ার জন্য যাতে দাঁত না নষ্ট হয়ে যায়, সেটাও তুমি অদ্ভুতভাবে বুঝিয়ে দিয়ে তোমার কথা মতোন মানিয়ে নিতে। পরীক্ষায় কখনও খারাপ নম্বর পেলেও বকনি কখনও। আজও মনে পড়ে মা যখন স্কুলে থাকতে আমার খুব কাছের বন্ধু আমার সাথে বিট্রে করেছিল, সেদিন প্রথম তুমি আমার জন্য বাইরের লোকের সাথে লড়েছিলে। সেই প্রথম তুমি আমাকে বুঝিয়েছিলে সবাইকে চট করে নিজের ভালো বন্ধু ভাবতে নেই। সময় পেরিয়েছে। একটা সময় পড়াশোনার জন্য তোমার থেকে দূরেও পাঠালে। কিন্তু আমার মন খারাপ কিনা, বা জ্বর এসেছে কিনা ঠিক বুঝে যেতে আর সেই বুঝে আমাকে ফোন করে খোঁজ নিতে। ওই কটা বছর তোমার ফোন আসার অপেক্ষায় পরে থাকতাম শুধু। ভীষণ মিস করতাম। এমনকি এমন একটা সময় এসেছিল যখন আমি নিজের মনের জোর বজায় রাখতে পারিনি। সেই জায়গায় তুমি আমাকে হারতে না দিয়ে আমার হাত ধরে আমাকে টেনে তুলেছিলে। তাই আজ দেখো আমি মাস্টার্সের সেকেন্ড ইয়ারে আছি।
কিন্তু তোমাকে আমি কখনও একটা কথা পরিষ্কার করে বলিনি। সেটা আমার প্রেমের কথা, ভালোবাসার কথা। আমি যে একজনকে খুব ভালোবাসি সেটা তুমি হয়তো বোঝো। ছোটো থেকে তুমি সব সময় বলে এসেছো শিখিয়ে এসেছো আমাকে যে যাই করি, কিন্তু কখনও যাতে কারও অনুভূতি নিয়ে না খেলি। আমি খেলিনি, আমি খুব ভালোবেসেছি, বিশ্বাস করেছি, ভবিষ্যতের কিছু স্বপ্নও গড়েছিলাম আমি। কিন্তু সেই মানুষটা আজ আমার সাথে নেই। থাকতে চায় নি। তুমি বার বার কয়েক মাস ধরে জিজ্ঞেস করে এসেছো, কোনও উত্তর তোমাকে দিতে পারিনি সব সময় এরিয়ে গেছি। কিন্তু আমার হাতে পায়ের দাগ দেখে সবটাই বুঝেছো। জানো, আমার জন্মদিনের দিন শুনতে হয়েছিল আমাকে ঘেন্না করে খুব। পরের দিন তোমাকে জড়িয়ে ধরে খুব কাঁদতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার চোখে জল দেখলে তুমি কষ্ট পাবে ভেবে কিছু বলিনি। পরিণতিটাও মারাত্তক ছিল জানো। কিন্তু সবটাই তোমার থেকে লুকিয়েছি। জানো মা, ওই সময় শুধু মানুষ চিনেছি আমি। ইউনিভার্সিটিতে কয়েকজন বন্ধু খুব ভাবে পাশে থেকেছে। আমি একটু একটু করে যাতে ওই খারাপ সময় থেকে বেরিয়ে আসি তার জন্য ওরা নিজেদের সাধ্য মতো চেষ্টা করেছে। তোমার সামনে যতই হাসিখুশি থাকি তাও তুমি আমাকে বুঝতে পারো যে আমি ভালো নেই, তাই বার বার জানতে চাও যে কি হয়েছে সব ঠিক আছে কিনা। আজ সবচেয়ে অদ্ভুত লাগলো কোন জায়গায় জানো! যখন আমি বাড়ি ঢোকার পর তুমি এসে বললে, কোনও কিছু নিয়ে যাতে না ভাবি।" যা হয় ভালোর জন্য হয়। যদি কেউ চলে গিয়ে থাকে তাহলে তাকে যেতে দেওয়াই ভালো।" অদ্ভুত লাগলো শুনে কারণ তোমাকে তো কিছুই বলিনি। তাও কিভাবে জেনে গেলে সবটা। হয়তো তোমরা মায়েরা এরকমই হও। কিছু না বললেও বুঝে যাও সবটাই।
আজ এটা ভেবে সত্যি তোমার দেওয়া শিক্ষাটার উপর গর্ব বোধ করি। হ্যাঁ সত্যি আমি ঠকাই নি। আমি কারও অনুভূতিকে কষ্ট দিই নি। সবাই তোমার মতো করে সবার অনুভূতিকে এতটা সম্মান করে কি না জানা নেই। কিন্তু মা তোমার দেওয়া শিক্ষাগুলোকে নিয়ে সব সময় এগিয়ে যেতে চাই। কোনও দিনও হয়তো মুখে তোমাকে বলতে পারবো না তাই এখানে লিখে রাখলাম তোমার জন্য। কিন্তু আমি মুখে না বললেও তুমি সবটাই জানো, তাই এতটা আগলে রাখো আজও। মা আজ সত্যি বলতে পারি কিছুটা হলেও আমি আজ তোমার মতো হতে পেরেছি।
অনেক অনেক আদর আর ভালোবাসা।
তোমার মেয়ে
আজকের এই লেখাটা আর অন্য কাউকে নিয়ে লিখতে ইচ্ছে করলো না। আজ শুধু তোমাকে নিয়ে লিখতে মন করছে। ছোটো থেকে আমার বর্তমান সময় অবদি নানা ভাবে তুমি আমার পাশে থেকে আমাকে সাহস জুগিয়ে এসেছো। কোনো দিনও হেরে যেতে দাওনি। যখনই আমাকে ভাঙতে দেখেছো একটা ধাক্কা দিয়ে সামনে এগিয়ে দিয়ে এসেছো।
শুরু থেকে বলতে গেলে সেই প্রথম আমার জন্মের সময় কষ্ট তোমাকে কম পেতে হয় নি। নিজের শরীরের ক্ষতি হবে জেনেও আমাকে পৃথিবীর আলো দেখানোর জন্য সব ব্যথা সহ্য করেছিলে। শুধু তাই নয়। ডাক্তার যখন তোমাকে বলেছিল তোমার মেয়ে চব্বিশ ঘন্টাও কাটাতে পারবে কি না খুব সন্দেহ রয়েছে তখন তুমি হয়তো নিজের মনেই আমাকে বলেছিলে, " জলদি ওঠ না হলে হারামজাদি মেয়ে তোর কপালে দুঃখ আছে!" তোমার আমার প্রতি মনের জোর আর বিশ্বাসের জেরেই হয়তো সেই রাতটা কাটিয়ে তোমার কোলে এসেছিলাম। হ্যাঁ, এখনও আমি মা হয়ে উঠিনি, কিন্তু মেয়ে তো তাই উপলব্ধিটা বড্ডো বেশি করে করেই বলতে পারি সেদিন তোমার ওই হাসির কোনও তুলনা ছিল না। হয়তো নিজের চোখের জলটাও ধরে রাখতে পারো নি সেদিন।
ছোট থেকে খুব একটা বেশি জ্বালাই নি তোমাকে। সব সময় তুমি যা বলে এসেছো সেটাই মেনে এসেছিলাম। সে আমার চকোলেট বেশি খাওয়ার জন্য যাতে দাঁত না নষ্ট হয়ে যায়, সেটাও তুমি অদ্ভুতভাবে বুঝিয়ে দিয়ে তোমার কথা মতোন মানিয়ে নিতে। পরীক্ষায় কখনও খারাপ নম্বর পেলেও বকনি কখনও। আজও মনে পড়ে মা যখন স্কুলে থাকতে আমার খুব কাছের বন্ধু আমার সাথে বিট্রে করেছিল, সেদিন প্রথম তুমি আমার জন্য বাইরের লোকের সাথে লড়েছিলে। সেই প্রথম তুমি আমাকে বুঝিয়েছিলে সবাইকে চট করে নিজের ভালো বন্ধু ভাবতে নেই। সময় পেরিয়েছে। একটা সময় পড়াশোনার জন্য তোমার থেকে দূরেও পাঠালে। কিন্তু আমার মন খারাপ কিনা, বা জ্বর এসেছে কিনা ঠিক বুঝে যেতে আর সেই বুঝে আমাকে ফোন করে খোঁজ নিতে। ওই কটা বছর তোমার ফোন আসার অপেক্ষায় পরে থাকতাম শুধু। ভীষণ মিস করতাম। এমনকি এমন একটা সময় এসেছিল যখন আমি নিজের মনের জোর বজায় রাখতে পারিনি। সেই জায়গায় তুমি আমাকে হারতে না দিয়ে আমার হাত ধরে আমাকে টেনে তুলেছিলে। তাই আজ দেখো আমি মাস্টার্সের সেকেন্ড ইয়ারে আছি।
কিন্তু তোমাকে আমি কখনও একটা কথা পরিষ্কার করে বলিনি। সেটা আমার প্রেমের কথা, ভালোবাসার কথা। আমি যে একজনকে খুব ভালোবাসি সেটা তুমি হয়তো বোঝো। ছোটো থেকে তুমি সব সময় বলে এসেছো শিখিয়ে এসেছো আমাকে যে যাই করি, কিন্তু কখনও যাতে কারও অনুভূতি নিয়ে না খেলি। আমি খেলিনি, আমি খুব ভালোবেসেছি, বিশ্বাস করেছি, ভবিষ্যতের কিছু স্বপ্নও গড়েছিলাম আমি। কিন্তু সেই মানুষটা আজ আমার সাথে নেই। থাকতে চায় নি। তুমি বার বার কয়েক মাস ধরে জিজ্ঞেস করে এসেছো, কোনও উত্তর তোমাকে দিতে পারিনি সব সময় এরিয়ে গেছি। কিন্তু আমার হাতে পায়ের দাগ দেখে সবটাই বুঝেছো। জানো, আমার জন্মদিনের দিন শুনতে হয়েছিল আমাকে ঘেন্না করে খুব। পরের দিন তোমাকে জড়িয়ে ধরে খুব কাঁদতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার চোখে জল দেখলে তুমি কষ্ট পাবে ভেবে কিছু বলিনি। পরিণতিটাও মারাত্তক ছিল জানো। কিন্তু সবটাই তোমার থেকে লুকিয়েছি। জানো মা, ওই সময় শুধু মানুষ চিনেছি আমি। ইউনিভার্সিটিতে কয়েকজন বন্ধু খুব ভাবে পাশে থেকেছে। আমি একটু একটু করে যাতে ওই খারাপ সময় থেকে বেরিয়ে আসি তার জন্য ওরা নিজেদের সাধ্য মতো চেষ্টা করেছে। তোমার সামনে যতই হাসিখুশি থাকি তাও তুমি আমাকে বুঝতে পারো যে আমি ভালো নেই, তাই বার বার জানতে চাও যে কি হয়েছে সব ঠিক আছে কিনা। আজ সবচেয়ে অদ্ভুত লাগলো কোন জায়গায় জানো! যখন আমি বাড়ি ঢোকার পর তুমি এসে বললে, কোনও কিছু নিয়ে যাতে না ভাবি।" যা হয় ভালোর জন্য হয়। যদি কেউ চলে গিয়ে থাকে তাহলে তাকে যেতে দেওয়াই ভালো।" অদ্ভুত লাগলো শুনে কারণ তোমাকে তো কিছুই বলিনি। তাও কিভাবে জেনে গেলে সবটা। হয়তো তোমরা মায়েরা এরকমই হও। কিছু না বললেও বুঝে যাও সবটাই।
আজ এটা ভেবে সত্যি তোমার দেওয়া শিক্ষাটার উপর গর্ব বোধ করি। হ্যাঁ সত্যি আমি ঠকাই নি। আমি কারও অনুভূতিকে কষ্ট দিই নি। সবাই তোমার মতো করে সবার অনুভূতিকে এতটা সম্মান করে কি না জানা নেই। কিন্তু মা তোমার দেওয়া শিক্ষাগুলোকে নিয়ে সব সময় এগিয়ে যেতে চাই। কোনও দিনও হয়তো মুখে তোমাকে বলতে পারবো না তাই এখানে লিখে রাখলাম তোমার জন্য। কিন্তু আমি মুখে না বললেও তুমি সবটাই জানো, তাই এতটা আগলে রাখো আজও। মা আজ সত্যি বলতে পারি কিছুটা হলেও আমি আজ তোমার মতো হতে পেরেছি।
অনেক অনেক আদর আর ভালোবাসা।
তোমার মেয়ে
Comments
Post a Comment