প্রতিদিনের মতন


“প্রতিদিনের মতোই রোজ সকালে এই ভেবে ঘুম থেকে উঠি এই বুঝি তোমার সাথে কথা হবে, এই বুঝি তুমি একটা এসএমএস করবে। এই ভেবে ঘুম থেকে উঠি আজ বুঝি তোমার সাথে কথা হবে! কিংবা হঠাৎ করেই তোমার সাথে দেখা হয়ে যাবে। রোজ সকালে উঠে ভাবি আজ হয়তো দিনটা একটু অন্যরকম যাবে, তোমার সাথে। সারাদিন আর কিছু চাই না তোমার সঙ্গ ছাড়া।
প্রতিদিনের মতোই রোজ সকালে উঠে এটা ভাবি যেন তুমি ছাড়া সারাদিন অন্য কাউকে নিয়ে ভাবতেই না হয়। আমার সব খুঁটিনাটি কাজের মধ্যে দিয়েও যেন তোমাকেই খুঁজে পাই। প্রতিদিনের মতো আমি এটাই চাই যাতে তোমার মধ্যে দিয়েই নিজেকে খুশি করার আরেকটা অজুহাত পেয়ে যাই।
জানি তুমি কি ভাবছ। তোমার ভাবনাটাকে দোষও দিই না। কারণ আমি জানি এভাবে হয়তো তোমাকে আগে কেউ চায় নি। ভুল বললাম! এভাবে হয়তো তোমাকে কেউ আগে ভালোবাসেনি। তাই হয়তো এটার সাথে খুব বেশি পরিচয় তোমার নেই। কি সুন্দর করে মজার ছলে আমাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিলে সেটা ভাবতেও পারিনি। তখনও সকালটা তোমাকে দিয়েই শুরু হতো। কিন্তু সেইখানে ছিল অনেকটা জুড়ে ভালোবাসা, ভালোলাগা আর ভালো থাকা।  জানি আমি তুমি কখনও আমাকে সেইভাবে ভালবাসতে পারনি। আর তাই নিজেকে আমার থেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছিলে। তার জন্য শুধু একটু খারাপ লাগা রয়ে গেছে। কিন্তু বাকিটা জুড়ে শুধুই তোমাকে ভালোবেসে চলেছি। “
হ্যাঁ কিছু কিছু ভালোবাসার পরিণতিটা ঠিক এরকমই হয়। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে এমন কিছু ঘটনা থাকে যা আমরা কাউকেই বলে উঠতে পারি না। হয়তো অপেক্ষায় থাকি সেই কাছের মানুষটিকে বলে ওঠার কিন্তু সে যে কখনও বুঝবেনা ভেবে আর বলা হয়ে ওঠে না। বাস্তব জীবনে কোনও মানুষকে চরম ভালোবাসার পর সেই কাছের বিশ্বাস করা মানুষটাই যখন আমাদের ছেড়ে চলে যায় কিংবা সব কিছু বুঝেও না বোঝার ভান করে তখন স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের একাকিত্ব গ্রাস করে বসে। যেটাকে বৈজ্ঞানিক ভাষায়ে আমরা “ডিপ্রেশাণ” বলে থাকি। কিন্তু কখনও কি আমরা এটা ভেবে দেখি যার জন্য এত কিছু তার কি কোনোরকম যায় আসে বলে! সত্যি বলতে একদমই যায় আসেনা সেই মানুষটার। তাহলে কিসের এতো তাকে নিয়ে ব্যাস্ততা! বেশ তো সে আছে নিজের মতন আরও অন্য অনেককে নিয়ে। তাহলে নিজেদেরও উচিত নিজেদের জীবনটা খুবই সুন্দর করে গড়ে তোলা। কাউকে নিজের জীবনে জায়গা দেওয়া যতোটা সোজা মনে হয় তাকে নিয়ে পথ চলা খুবই কঠিন যেটা সবাই পারেনা। তাই পালিয়ে বাঁচেন শেষের দিকে কাপুরুষের মতন। কখনও ভেবেও দেখেন না যে সেই মানুষটার কি অবস্থা যার সাথে এরকম করা হল।  হ্যাঁ হয়তো কখনও কোনও এক রাতে যখন নিজের বর্তমানের থেকে সেই ভালোবাসাটা পাবে না তখন ঠিক সেই সময়টাতে ওই অতিরিক্ত ভালোবেসে ফেলা মেয়েটির কথা মনে পরবে। ব্যাস! ওই টুকুই। পরের দিন থেকে আবার যে কে সেই। কি দরকার এরকম ভাবে কারও অনুভুতি নিয়ে খেলার। আসলে আমরা আজকালকার ছেলে মেয়েরা ভালোবাসার একটা বেশ সুন্দর সার্টিফিকেট বানিয়ে নিয়েছি যেখানে এক্সপাইরি ডেটটা অবদিও লেখা আছে। মন ভরে গেল তো ছেড়ে দিল। আর এর ভুক্তভুগি অপরদিকের মানুষগুলো হয়।
ভালোবাসা সবার জীবনেই দরকার। কেউ সারাটা জীবন একা কাটিয়ে দিতে পারে না। তাই ভালোবাসা যখনই পাই সেটাকে যত্ন করে আঁকড়ে ধরে রাখার দায়িত্ব শুধুই আমাদের। কখনও একজনের দিক দিয়ে সব কিছু হয় না। আর যখন আমি একান্তই কাউকে নিজের সাথে রাখতে পারবো না তাকে মিথ্যে আশা না দেওয়াই ভালো। কারণ সব সময় ভালোবাসা এভাবে দরজার কাছে এসে কড়া নাড়ে না। তাই বলি কি দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বুঝতে শেখা উচিত।
সব শেষে শুধু এটাই বলতে চাই, " প্রতিদিনের মতন এখন আর সকালে উঠে তোমার কথা ভাবিনা। মনে পরে না আর তোমাকে। না থাকে তোমার একটা ফোনের আশা, না থাকে আর তোমার সাথে দেখা করার ইচ্ছা। এই তো দেখোই না বেশ আছি তোমাকে ছাড়া। নিজেকে নিয়ে যে আজকাল আমি আরও বড্ড ব্যাস্ত! হইনি কোনও দিনও তোমার সেই পাগলের মতন ভালোবাসা। বিশ্বাস কর আজ আমিও আর সেই পাগলের ভালোবাসায়ে বিশ্বাসই রাখি না। কিন্তু তোমাকে ভালোবাসি এটা ঠিকই। তুমি খুবই ভালো থেকো যার সাথেই থেকো। হয়তো আজ তোমার কপালে আর সেই আমিটা নেই।"

Comments

Popular posts from this blog

রঙ-তুলির আত্মকথা

আমার একটা তুমি চাই

আমার শহর